কি আছে শরীফ-শরীফা গল্পে? শরীফ-শরীফা কি আসলেই সমালোচিত বিষয়কে সাপোর্ট করে?

প্রতিকী ছবি

শরীফ-শরীফা!!! 

এইটা কোন ইস্যু হওয়ার কথা ছিলো না। কিন্তু ইস্যু হয়েছে। কারা করেছে? যারা এধরণের গল্প তৈরি করেছে। এবং গল্প বলার ভাষায় উভয়মুখী ভাবনার সৃষ্টি করেছেন।
কিছু জিনিস আছে যেগুলো নিয়ে আলোচনা না হওয়াই ভালো। এই গল্প যে বিষয়টির প্রতিনিধিত্ব করে তার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। অন্তত ক্লাস সেভেনের কোমলমতি শিশুদের জন্যই তো নয়ই। নারী, পুরুষ এবং ৩য় লিঙ্গ পৃথিবীতে কেবল মাত্র এই ৩ ধরনের জেন্ডার আছে, আর এটাই শেষ কথা! কথাটা জোড়ের না- কথাটা বৈজ্ঞানিক, বুদ্ধি-বিবেক ও বিবেচনার। 

ন্যাচারালি একজন মানব শিশু জন্মের সময়ই নিজস্ব লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে জন্মায়। ক্রোমোজমিক বিন্যাস থেকে স্বাভাবিক শিশু দুই ধরনের আর সেক্সুয়াল ডিসঅর্ডারে ৩য় লিঙ্গের শিশুর জন্ম হয়। কি সহজ ও স্বাভাবিক প্রসেস। পৃথিবীতে এদের নিয়ে কারো কোন সমস্যা নেই। শরীফ-শরীফা গল্পে এলজিবিটিকিউ সাপোর্ট করে কিছুই নেই। এটি খুব সাধারণ একটি ৩য় লিঙ্গের মানুষের গল্প কথা। তাহলে সমস্যা কোথায়? সমস্যা হলো গল্পের বাচন ভঙ্গিতে। 

গল্পের শুরুতে - 

সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবই থেকে 

তো মূল সমস্যাটা এখানেই। এলজিবিটিকিউ বা তার সমমনা গোষ্ঠির বাচন বিন্যাস ও ধরণ এ ধাঁচেরই। একজন ছেলে ছেলেই, একজন মেয়ে মেয়েই। একজন ৩য় লিঙ্গের মানুষ শুরু থেকেই ৩য় লিঙ্গেরই হয়। এইখানে লুকোচুরির কিছু নেই, কোন গোপনীয়তাও নেই। আমাদের সমাজে এখনো ৩য় লিঙ্গের মানুষদের আঢ় চোখে দেখা হয়। সেই ধারাবাহিকতা পরিবর্তনে তাদের নিয়ে দৃষ্টিকোন পরিবর্তনে দারুন একটি গল্প রচনা করা যেতো। যার ভাষা শিক্ষার্থীদের মিসগাইড না সঠিক পথ দেখাবে। 
কিন্তু এই লেখার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভাষাগত ব্যবহার বেশ কটু দৃষ্টি সম্পন্ন। যা শিক্ষার্থীদের মিসগাইড করতে শতভাগ উপযোগী। 

এবার আসি এতো আলোচনার মূল কারণে। বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম প্রধান সমস্যা এলজিবিটিকিউ বা সমকামিতা। যে টার্মটা নতুন নয়, পূর্বেও এ পাপের মাশুল দিয়েছে পৃথিবী। কিন্তু নতুন করে এর প্রকাশ প্রকট হচ্ছে এটাই মূল সমস্যা। সমস্যাটা মেন্টালি আনস্টেবল কিছু জনগোষ্ঠী নিয়ে। সমস্যাটা কিছু বিকৃতমনা ও মিসগাইডেড পেশেন্ট নিয়ে। যারা নারী-পুরুষ-৩য় লিঙ্গ এই ৩ টি টার্মের বাইরে আরো অস্তিত্ব তৈরি করতে চায়। এরা নিজেরাও জানে না এরা কতটা মানসিক ভাবে অসুস্থ। কিন্তু এদের প্রনোদিত করে স্পষ্ট সক্রিয় একটা গোষ্ঠী গোটা পৃথিবী জুড়ে এদের প্রসার ঘটিয়েছে।  

এখন আপনি বলবেন- আপনার কথায় ওরা যেহেতু মানসিক অসুস্থ তাহলে ওদের প্রতি আমাদের কোন কেয়ার বা বিশেষ দৃষ্টির প্রয়োজন নেই? আমি বলবো- হ্যাঁ আছে, যেমন দৃষ্টি আমরা পাগলা গারদে প্রতিটা পাগলদের দেই। পাগলদের চিকিৎসার প্রয়োজন, সেবাশুশ্রূষার প্রয়োজন। কিন্তু পাগলদের এটা না করে আমরা যদি বলি- পাগলামিও একটা স্বাভাবিক প্রসেস। পাগল হওয়াটা দোষের না। তোমরা পাগলামি করতে থাকো, তোমরা আর পাঁচজনের মতো স্বাভাবিক! তাহলে ভাই আপনার নিজের চিকিৎসা প্রয়োজন আগে। 

গোটা ইউরোপ ছেয়ে গেছে, মধ্যপ্রাচ্য ছোয়া পাচ্ছে অলরেডি। আমাদের মতো গেয়ো এশিয়ানরাও এখন বেশ জেগে উঠছে। এতো এতো মানুষে এমন বিবেকহীন হয়ে যাচ্ছে তা এক কথায় রিশি সুনাক বেশ কিছুদিন আগেই বলেছেন।

Rishi Sunak, Prime Minister of UK
 
এবার আসি ধর্মের ছায়ায়। আমি আমার ছাত্রদের সবসময়ই কিছু টপিক পড়ানোর আগে ২ টা চয়েজ দেই। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ও ধর্মীয় ব্যাখ্যা। এবং দুটো ব্যাখ্যাই এক্সপ্লেইন করি। উদ্দেশ্য জানার পরিধি যত বাড়বে মস্তিষ্ক ভাবার সুযোগ পাবে তত। আপনারা যারা এল*জি*বিটি*কিউর মতো বিতর্কিত বিষয়ের পক্ষে তাদের কাছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ( যদি প্রোপার ব্যাখ্যা ও সুনির্দিষ্ট সমাপ্তি নেই) ছাড়া আর কিছুই নেই। কিন্তু আমাদের কাছে বৈজ্ঞানিক ও ধর্মীয় দু ধরনের ব্যাখ্যাই আছে। আপনি যে ধর্মেরই হন, ধর্ম আপনাকে যতটা এথিকস ও ধারাবাহিকতা শেখাবে বিজ্ঞান তা পারবে না। বিজ্ঞানের তো বিষয়ই নয় এটা। বিজ্ঞান হচ্ছে চর্চা ও সমৃদ্ধির বিষয়। এথিকাল টার্ম গুলো বিজ্ঞানের সাব্জেক্ট নয়। বিজ্ঞান কে ধর্ম বানিয়ে ফেলাই এদের প্রধানতম ভুল। 

এইবার আসি বর্তমান শরীফ-শরীফার সমাধান নিয়ে৷ ব্রাকের যে শিক্ষক আওয়াজ তুললেন তার চাকরিচ্যুত করার মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট যে এই যুদ্ধটা সংখ্যালঘু ক্ষমতাধর ও সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষমতাহীনের। তো এখানে আমরা এই নিরব প্রতিবাদটাই করতে পারি। পাঠ্যবই গুলোতে এই টাইপের যত অনুচ্ছেদ আছে তা শিক্ষকরা এড়িয়ে যাবেন। শিক্ষার্থীদের এধরণের গল্প অনুচ্ছেদ পড়াবেনও না স্কুল কর্তৃক এক্সামগুলোতে এখান থেকে প্রশ্নও করবেন না। যেহেতু মাধ্যমিক লেভেলগুলোতে তেমন কোন ভিজিটর আসে না। আর আসলেও আপনারা জানেন এদেশে কিভাবে কি ম্যানেজ করতে হয়। কওমে লুতের কাহিনি মুসলিম ও অমুসলিম সকলেই জানেন। বিশদ উপকারীতার কথা চিন্তাকরে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বাঁচানোর এই একমাত্র উপায়। 

রেদোয়ান আহমেদ
২২ জানুয়ারি, ২০২৪
নারায়ণগঞ্জ।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

_________________________________________________

এখানে প্রকাশিত সমস্ত লেখা 'রেদোয়ান আহমেদ' কর্তৃক সংগৃহীত। © ২০২১-২০২৫