লালবাগ শাহী মসজিদে এক মনোহর ইফতার
![]() |
সন্ধ্যার লালবাগ শাহী মসজিদ |
একটা দারুণ গল্প বলি-
গতকাল ভার্সিটি শেষে ইফতার করতে গিয়েছিলাম পুরান ঢাকার চকবাজারে। বন্ধুদের নিয়ে হৈ হৈ রৈ রৈ ব্যপার। লোকাল জ্যাম আর দীর্ঘ পথ হেটে যখন চকবাজার গেলাম তখন আসরের ওয়াক্ত। স্থানীয় লোকাল মসজিদে নামাজ শেষে দেখি ফ্রেন্ডদের একেক জন একে গেট দিয়ে বেরিয়েছে। সবাই এক সাথে হতে হতে দেখি হাতে ইফতারের আর মাত্র ২০/২৫ মিনিট বাকি। এতো তুমুল উদ্দীপনা নিয়ে আসলাম কিন্তু এখনো কিছুই কেনা হলো না।
এরপর খাবারের দোকান ঘুরে এবং জায়গার সংকুলান দেখে সত্যিকার সারমর্ম হলো এইভাবে ইফতার খাওয়াটা ভালো হবে না। মূহুর্তেই প্লান চেঞ্জ। লালবাগ গিয়ে কোন একটা রেষ্টুরেন্টে অথবা হোটেলে বসবো। লালবাগ যাচ্ছি, ইফতারের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। এরপর এক লোকাল দোকানদারকে বললাম আমরা ইফতার করবো- আশেপাশে স্পেস আছে কিনা? সে বরাবর লালবাগ শাহী জামে মসজিদ দেখিয়ে দিলো। ১৭০৩ খ্রিঃ তৈরি হওয়া বিশালাকার মসজিদ। সুলতানী আবেশ আর মুসলিমদের গৌরবউজ্জ্বল ইতিহাসের অন্যতম নিদর্শন।
মসজিদে ইফতার করিনি কখনো। এলাকার মসজিদ গুলো যখন বলে- তখন ভাবি এই ইফতারের হকদার হচ্ছে পথিকেরা। তবে কাল বেশ উচ্ছ্বাস নিয়েই মসজিদে ঢুকে গেলাম। দুই তলায় ইফতারের ব্যবস্থা। আমরা সাত জন। তখন কেবল দুই সারি মানুষ বসে আছে। আমাদের সাথে ব্যাগ দেখে তত্ত্বাবদায়ক মুরুব্বিরা কোথায় বসলে ভালো হয় সে নিয়ে বেশ টানাটানি করলেন। আপ্যায়ন ছিলো শতভাগ। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই পুরো মসজিদ টইটুম্বুর হয়ে গেলো। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়োঃবৃদ্ধ সব শ্রেণীর মানুষের ভীড়ে মূহুর্তেই এক অন্য রকম আবেশ তৈরি করলো। অবস্থাদৃষ্টে আমার ভুল না হলে হাজার খানেকের বেশি মানুষ হবে। ছোট ছোট কিছু বাচ্চাও বসেছিলো আমাদের সাথে। একজন বসেছে সুন্নতি তরিকায়। খাবার নিয়ে তাদের নড়াচড়া, বিশেষ আগ্রহ আমি ,আমরা শুধু অবাক হয়ে দেখছি। আরও অবাক হচ্ছি তত্ত্ববদায়কদের সবার প্রতি বিশেষ নজর দেখে।
ইফতার আইটেম হিসাবে যা যা ছিলো তা দেখে আরও চক্ষু চড়কগাছ। সাধারণ ঘরোয়া ইফতার। কিন্তু বাহারি আইটেম, কোয়ান্টিটি এবং পরিবেশন দেখে মনে একটাই কথা আসছে- ডেইলি এতো মানুষকে এই পরিমাণ খাওয়ালে পুরো রোজায় বাজেটের পরিমাণ কেমন দাঁড়াবে। রমজান মাসটাই যে আল্লাহর বিশেষ রহমত তার এক বড় উদাহরণ দেখেছি কাল।
ইফতার শেষে আমাদের অবস্থা এমন, যেসব বাহারি আইটেম খাবো বলে গিয়েছি তারচেয়ে বেশি খাওয়া হয়ে গেছে। নিজেরা কিনে অন্য কিছু খাওয়ার মতো অবস্থায় আর নেই। মসজিদ থেকে বের হয়ে নিজেদের রিজিক নিয়ে শোকরানা আদায় না করে পারা যায়নি। ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে বিশেষ একটা ইফতার, বলা যায় অত্যন্ত দারুণ একটা ইফতার হয়েছে।
শাহেন শাহী আমলের পুরোনো এই মসজিদের শহরে ইফতারের লোকারাণ্য অবস্থা যে কাউকে মুগ্ধ করবে। তবে মসজিদ কর্তৃক এই বিশাল আয়োজন নিজে না দেখলে অনুধাবন করার জো নেই।
রেদোয়ান আহমেদ
সোমবার
১৬ রমজান, ১৪২৬ হিজরি
পুরান ঢাকা।
এরপর খাবারের দোকান ঘুরে এবং জায়গার সংকুলান দেখে সত্যিকার সারমর্ম হলো এইভাবে ইফতার খাওয়াটা ভালো হবে না। মূহুর্তেই প্লান চেঞ্জ। লালবাগ গিয়ে কোন একটা রেষ্টুরেন্টে অথবা হোটেলে বসবো। লালবাগ যাচ্ছি, ইফতারের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। এরপর এক লোকাল দোকানদারকে বললাম আমরা ইফতার করবো- আশেপাশে স্পেস আছে কিনা? সে বরাবর লালবাগ শাহী জামে মসজিদ দেখিয়ে দিলো। ১৭০৩ খ্রিঃ তৈরি হওয়া বিশালাকার মসজিদ। সুলতানী আবেশ আর মুসলিমদের গৌরবউজ্জ্বল ইতিহাসের অন্যতম নিদর্শন।
মসজিদে ইফতার করিনি কখনো। এলাকার মসজিদ গুলো যখন বলে- তখন ভাবি এই ইফতারের হকদার হচ্ছে পথিকেরা। তবে কাল বেশ উচ্ছ্বাস নিয়েই মসজিদে ঢুকে গেলাম। দুই তলায় ইফতারের ব্যবস্থা। আমরা সাত জন। তখন কেবল দুই সারি মানুষ বসে আছে। আমাদের সাথে ব্যাগ দেখে তত্ত্বাবদায়ক মুরুব্বিরা কোথায় বসলে ভালো হয় সে নিয়ে বেশ টানাটানি করলেন। আপ্যায়ন ছিলো শতভাগ। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই পুরো মসজিদ টইটুম্বুর হয়ে গেলো। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়োঃবৃদ্ধ সব শ্রেণীর মানুষের ভীড়ে মূহুর্তেই এক অন্য রকম আবেশ তৈরি করলো। অবস্থাদৃষ্টে আমার ভুল না হলে হাজার খানেকের বেশি মানুষ হবে। ছোট ছোট কিছু বাচ্চাও বসেছিলো আমাদের সাথে। একজন বসেছে সুন্নতি তরিকায়। খাবার নিয়ে তাদের নড়াচড়া, বিশেষ আগ্রহ আমি ,আমরা শুধু অবাক হয়ে দেখছি। আরও অবাক হচ্ছি তত্ত্ববদায়কদের সবার প্রতি বিশেষ নজর দেখে।
ইফতার আইটেম হিসাবে যা যা ছিলো তা দেখে আরও চক্ষু চড়কগাছ। সাধারণ ঘরোয়া ইফতার। কিন্তু বাহারি আইটেম, কোয়ান্টিটি এবং পরিবেশন দেখে মনে একটাই কথা আসছে- ডেইলি এতো মানুষকে এই পরিমাণ খাওয়ালে পুরো রোজায় বাজেটের পরিমাণ কেমন দাঁড়াবে। রমজান মাসটাই যে আল্লাহর বিশেষ রহমত তার এক বড় উদাহরণ দেখেছি কাল।
ইফতার শেষে আমাদের অবস্থা এমন, যেসব বাহারি আইটেম খাবো বলে গিয়েছি তারচেয়ে বেশি খাওয়া হয়ে গেছে। নিজেরা কিনে অন্য কিছু খাওয়ার মতো অবস্থায় আর নেই। মসজিদ থেকে বের হয়ে নিজেদের রিজিক নিয়ে শোকরানা আদায় না করে পারা যায়নি। ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে বিশেষ একটা ইফতার, বলা যায় অত্যন্ত দারুণ একটা ইফতার হয়েছে।
শাহেন শাহী আমলের পুরোনো এই মসজিদের শহরে ইফতারের লোকারাণ্য অবস্থা যে কাউকে মুগ্ধ করবে। তবে মসজিদ কর্তৃক এই বিশাল আয়োজন নিজে না দেখলে অনুধাবন করার জো নেই।
রেদোয়ান আহমেদ
সোমবার
১৬ রমজান, ১৪২৬ হিজরি
পুরান ঢাকা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার গাঠনিক মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।