ঢাবাকা

টানা ছুটির দিন তাই টানা বই শেষ করার মজাই আলাদা। আগ্রহ আর উচ্ছ্বাস দুইটাই প্রবল থাকে তখন। আর এমন বৃষ্টিস্নাত দিনে তাকে আমি বলবো জমে ক্ষীর। 

'ঢাবাকা' মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের প্রথম কোন পরাবাস্তব নগরীর গ্রাফিক্স থৃলার। 
নাজিম ভাইয়ের লেখার ধাঁচ নিয়ে আমি অতি সন্দেহ প্রবণ। তার লেখার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ২০১৮ দিকে 'দ্যা ভিঞ্চি কোড' এর মাধ্যমে। তখন না আমি ড্যান ব্রাউনকে চিনি, না চিনি নাজিম উদ্দিনকে। কিন্তু তার সেই অনুবাদ আজীবন আমার মনে দাগ কেটে থাকবে। সাধু সাধু। 

কিন্তু এরপর তার নিজের কন্ট্রাক্ট, নেমেসিস, রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেনি, রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেনি পড়ে মোটামুটি একটা ধারণায় আসতে পেরেছি। তার দুই টা রূপ। এক কিছু কিছু বই তিনি সেরার সেরাতে অবস্থান করিয়েছেন কিন্তু পাশাপাশি কয়েকটা তেমন মন টানতে পারেনি। এটা পুরোপুরোই আমার অভিমত। স্বীকার করি আরো পড়তে হবে। 

মূল কথায় আসি, 'ঢাবাকা' শুরু করার পূর্বেই লেখক বলে দিয়েছেন এটা তার প্রথম গ্রাফিক্স ও নিরীক্ষাধর্মী থৃলার। পাশাপাশি এও বলেছেন- তার স্বজাত অভ্যাসের বাইরে গিয়ে, পূর্বেই কিছু ঠিক না করে; লিখতে লিখতে থৃলারটি কেমন দাঁড়ায় তা দেখতে চেয়েছেন। কিন্তু আমার তা মনে হয়নি। লেখক অত্যন্ত দক্ষতার সাথে প্রতিটা ঘটনা উপঘটনার সাথে মিল দেখিয়েছেন। এবং শেষ পর্যন্ত একটা অর্থবহ গল্পে দাঁড় করাতে পেরেছেন। বেশ তৃপ্তিদায়ক ঠান্ডা মাথার একটি থৃলার। 

গল্পের সাথে তাল রেখে গ্রাফিক্সের বিষয়ে বলতে গেলে প্রশংসা না করে উপায় নেই। প্রত্যেকটা চিত্র দারুণ মানানসই এবং এভারেজ লেভেলের হলেও কিছু কিছু ছিলো দুর্দান্ত। গল্পের চিত্রনাট্য আরো দারুণ বিশ্লেষণ করেছে গ্রাফিক্সগুলো। কিছুটা ছোটবেলার এডভেঞ্চার ধর্মী আলেকজন্ডার দ্যুমা এর থ্রি মাস্কেটিয়ার্স, দ্যা কাউন্ট অব মন্টে ক্রিস্টো কিংবা আর্নেস্ট হ্যামিংওয়ের ছোট ছোট গল্পগুলোর গ্রাফিক্স ডিজাইনের ফিল পাওয়া যায়। মোটামুটি বলা যায়, এটা জটিল কিংবা অতি ভাবনার কোন থৃলার না হলেও এর বলিষ্ঠ চিত্রকর্ম বইটিকে দারুণ এক অবস্থানে রেখেছে। 

বইঃ ঢাবাকা
লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
 


মন্তব্যসমূহ

_________________________________________________

এখানে প্রকাশিত সমস্ত লেখা 'রেদোয়ান আহমেদ' কর্তৃক সংগৃহীত। © ২০২১-২০২৫