পকেটমার...!
বৃহস্পতিবার বিকেল। সারা শহরে পাহাড়ি ঢলের মতো নেমে গেছে সাপ্তহভর্তি কর্মব্যস্থ থাকা শ্রমিকেরা। শহরের প্রতিটা বাসই যেনো গন্তব্যে পৌঁছানোর শেষ বাস হয়ে গেছে আজ। নিরাময় অযোগ্য জ্যাম, ব্লকেজে ভরে গেছে শহরের প্রতিটি সড়ক, মহাসড়ক, বাইপাস থেকে শুরু করে গলির রাস্তা পর্যন্ত।
হট্টগোল এর শতমানুষের ভিড় ঠেলে কোনমতে উঠে গেলাম একটি বহু কাঙ্ক্ষিত লোকাল বাসে। এ বাসে যেতে পারলে ভাড়া অনেকাংশেই কমে যাওয়া যাবে। তাই তো এতো অপেক্ষা, এতো কোলাহল।
কিন্তু এর মধ্যেই শুনি পকেট মার! আমার সাথের জনের।
সামান্য ভাড়া বাঁচাতে এখন হাজার টাকাসহ ব্যক্তিগত নানাবিধ ডকুমেন্ট হারিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। বাস থেকে নেমে ইজি বাইকে দশ কিলোর মতো পথ। ইজি বাইকে আমার সামনেই এক বৃদ্ধা। কিছু দূর যাওয়ার পর আমাকে তার গন্তব্যস্থলের ভাড়া জানতে চাইলেন।
- জেলা পরিষদ পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা।
হট্টগোল এর শতমানুষের ভিড় ঠেলে কোনমতে উঠে গেলাম একটি বহু কাঙ্ক্ষিত লোকাল বাসে। এ বাসে যেতে পারলে ভাড়া অনেকাংশেই কমে যাওয়া যাবে। তাই তো এতো অপেক্ষা, এতো কোলাহল।
কিন্তু এর মধ্যেই শুনি পকেট মার! আমার সাথের জনের।
সামান্য ভাড়া বাঁচাতে এখন হাজার টাকাসহ ব্যক্তিগত নানাবিধ ডকুমেন্ট হারিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। বাস থেকে নেমে ইজি বাইকে দশ কিলোর মতো পথ। ইজি বাইকে আমার সামনেই এক বৃদ্ধা। কিছু দূর যাওয়ার পর আমাকে তার গন্তব্যস্থলের ভাড়া জানতে চাইলেন।
- জেলা পরিষদ পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা।
ভাড়া বলেই আমি আমার কর্তব্য শেষ মনে করে নিজেদের দুঃখের কাছে ফিরে আসলাম। নিজেদের নিয়ে এই ব্যস্ত পৃথিবী সবার খোঁজ রাখতে পারে না। রাখা উচিত না।
- বাবা আমারে দশটা টাকা দিবা। আমার কাছে দশ টাকাই আছে। ভাড়া দিয়ে বাসায় গিয়ে টাকা এনে নাতীটারে নিয়ে আবার ডাক্তারের কাছে যাবো।
- বাবা আমারে দশটা টাকা দিবা। আমার কাছে দশ টাকাই আছে। ভাড়া দিয়ে বাসায় গিয়ে টাকা এনে নাতীটারে নিয়ে আবার ডাক্তারের কাছে যাবো।
তার হাতে একটা দশটাকার নোট দেখিয়ে দেখিয়ে আমাকে বলে উঠলো বৃদ্ধা। তাকে দেখে ভিখারী কিংবা অসহায় শ্রেণীর কেউ মনে হচ্ছে না। তবে টাকা চাওয়ার পরই তার চেহারার দিকে খেয়াল করলাম। স্পষ্ট অসহায়ত্ব। অনেক বছর ধরেই আমার একটা অভ্যাস। যখনি কোন অসহায়, বিপদগ্রস্থ বৃদ্ধা দেখি তখন খুব করে তাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকি। তাদের তরুণ বয়স, কিশোর বয়স, দুরন্ত শৈশবের চেহারা খুঁজে দেখতে চাই। অনুমান করতে চাই কেমন ছিলো সেসময়ে তাদের চেহারা? তাদের আজকের এই সময় আজকে এই পরিনতি তখন কি তারা জানতো? তারা কি করেছে অনুমান?
আমি পরোক্ষণেই তাকে টাকা দিয়ে দিলাম। আমাদের অবস্থা তো তার জানা নেই। কিন্তু সে আমাদের কাছে তার অসহায়ত্ব বলতে পেরেছেন। বুকে পাথড় বাধা তার চেহারা আমি দেখেছি। টাকাটা দিতে না পারলে তিনি আরো ছোট হয়ে যেতেন। ছোট্ট এই জীবনে মানুষকে ছোট করতে নেই। টাকা পেয়ে তার চিন্তামুক্তির চেহারাও আমরা দেখেছি। আমাদের এর দুঃখ নেই। এক জীবনে আসলে তেমন বেশি দুঃখ রাখতেও নেই।
আমি পরোক্ষণেই তাকে টাকা দিয়ে দিলাম। আমাদের অবস্থা তো তার জানা নেই। কিন্তু সে আমাদের কাছে তার অসহায়ত্ব বলতে পেরেছেন। বুকে পাথড় বাধা তার চেহারা আমি দেখেছি। টাকাটা দিতে না পারলে তিনি আরো ছোট হয়ে যেতেন। ছোট্ট এই জীবনে মানুষকে ছোট করতে নেই। টাকা পেয়ে তার চিন্তামুক্তির চেহারাও আমরা দেখেছি। আমাদের এর দুঃখ নেই। এক জীবনে আসলে তেমন বেশি দুঃখ রাখতেও নেই।

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার গাঠনিক মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।